বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলন

জাতিসংঘ আয়োজিত একটি বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলন Conference of the Parties (COP) বা বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন। এতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কীভাবে মোকাবিলা করা যায় জাতিসংঘের নেতৃত্বে এ নিয়ে আলোচনা করা হয়। ৩০ নভেম্বর-১৩ ডিসেম্বর ২০২৩ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ২৮তম আসর অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনের পূর্বাপর নিয়ে আমাদের এ আয়োজন।

কপ

COP’র পূর্ণরূপ Conference of the Parties। জলবায়ুতে মানুষের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় ১৯৯২ সালে জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক জাতিসংঘের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনে (UNFCCC) স্বাক্ষর করা হয়। এরপর ১৯৯৫ সাল থেকে, জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক সম্মেলন (COP) প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয়।

[penci_related_posts dis_pview=”no” dis_pdate=”no” title=”এই বিভাগ থেকে আরো পড়ুন” background=”” border=”” thumbright=”no” number=”4″ style=”list” align=”none” withids=”” displayby=”cat” orderby=”rand”]

তথ্যবহুল কপ-২৮

১৯৮টি দেশ ও অঞ্চলের পায় ৭০,০০০ লোক অংশগ্রহণের মাধ্যমে সর্বকালের বৃহত্তম জলবায়ুবিষয়ক সম্মেলন হয় এটি-

  • ২০২৪ সালে কপ-২৯ সম্মেলন হবে আজারবাইজানে
  • ২০২৫ সালের আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলন কপ-৩০ এর আয়োজন করবে ব্রাজিল
  • ২০২৮ সালে কপ-৩৩ শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তাব করে ভারত
  • ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (CVF) নতুন সভাপতি হয় ক্যারিবীয় দেশ বার্বাডোজ
  • জলবায়ুর ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলা- সংক্রান্ত তহবিল লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড পুনর্গঠন
  • কপ-২৮ এর সভাপতি সুলতান আল-জাবের।

সম্মেলনে প্রাপ্তি

  • জীবাশ্ম জ্বালানি চুক্তি : কপ-২৮ সম্মেলনে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস শুরু করার বিষয়ে সম্মত হয়ে একটি চুক্তি করে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো। অংশগ্রহণকারী প্রায় ২০০ দেশ ও অঞ্চল চুক্তির বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছায়। এরপর ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩ এ লক্ষ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে এই প্রথম পরিষ্কার একটি প্রস্তাব নিয়ে বিশ্ব নেতারা ঐক্যবদ্ধ হয়। চুক্তিতে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসতে ‘অন্তর্বর্তীকালীন জ্বালানি’ হিসেবে গ্যাস ও কার্বন দূষণ কমানো এবং কষ্টসাধ্য এমন খাতে কার্বন নিয়ন্ত্রণ ও সংরক্ষণ (CCS) প্রযুক্তি ব্যবহার করবে।
  • গ্লোবাল স্টকটেক : গ্লোবাল স্টকটেক এবারের সম্মেলনের ঘোষণা হিসেবে আসা মূল দলিল। এ দলিলের মধ্য দিয়ে বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য জীবাশ্ম জ্বালানি যে প্রধানত দায়ী, সেটা জাতিসংঘ মেনে নেয়। কোন দেশ কী পরিমাণ জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করে তাপমাত্রা বাড়াচ্ছে তার একটি রূপরেখা এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে উঠে আসে। এখন থেকে বিশ্বের সব দেশ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কী করছে, তার হালনাগাদ তথ্য জানাবে।
  • নবায়নযোগ্য জ্বালানির সক্ষমতা বৃদ্ধি : কপ-২৮ সম্মেলনে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সক্ষমতা তিনগুণ বৃদ্ধি করতে সম্মত হন বিশ্বনেতারা। ২-৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ‘গ্লোবাল এক্সিলারেশন ফর ডিকার্বনাইজেশন চুক্তিতে স্বাক্ষর করে ১১৮টি দেশ। এ চুক্তির উদ্দেশ্য বিশ্বব্যাপী নবায়নযোগ্য শক্তির সক্ষমতা বর্তমানের ৩.৪ টেরাওয়াট থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে ১১ টেরাওয়াটে উন্নীত করা। এ ছাড়াও ৫০টি জ্বালানি উৎপাদক কোম্পানি ডিকার্বনাইজেশন চুক্তিতে স্বাক্ষর করে, যারা বিশ্বব্যাপী ৪০%-এর বেশি তেল ও গ্যাস উৎপাদন করে।
  • রেকর্ড তহবিল : জলবায়ুভিত্তিক প্রকল্পগুলোয় অর্থের প্রবাহ বৃদ্ধি করতে এই সম্মেলনে ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি নতুন বেসরকারি বিনিয়োগ তহবিল গঠনের ঘোষণা দেয় সংযুক্ত আরব আমিরাত (UAE)। ১ ডিসেম্বর ২০২৩ সংযুক্ত আরব আমিরাতের ঘোষিত তহবিলটির নাম দেওয়া হয় ‘আলতেরা’। আলতেরা নামক এ নতুন তহবিল ২০৩০ সাল নাগাদ মোট ২৫,০০০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে সক্ষম হবে। এছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাত ১০০ মিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রোগের (এনটিডি) সঙ্গে লড়াই করার জন্য ৭৭৭ মিলিয়ন ডলারের তহবিলের ভিত্তি তৈরি করছে।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বিভিন্ন ইস্যুতে ভেটো ক্ষমতা মানবতার পথকে সংকুচিত করে। ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস জাতিসংঘ সনদের ৯৯ ধারা প্রয়োগ করে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক আহ্বান করেন, যেখানে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনির গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। কিন্তু শুধু যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর কারণে প্রস্তাবটি ভেস্তে যায়। এ প্রেক্ষাপটে জেনে নিন ভেটো সম্পর্কিত নানা তথ্য।

Related Post

Leave a Comment