প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টে কিভাবে আবেদন করবেন?

দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা যেন অর্থাভাবে ঝড়ে না পড়ে সেই লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যাগে একটি ট্রাস্ট গঠন করা হয়। যা মূলত প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট নামে পরিচিত। এই ট্রাস্টটি ২০১২ সালে প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত প্রচেষ্টায় গঠন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট এর মাধ্যমে ৬ষ্ঠ থেকে স্নাতক (পাস) ও সমমান শ্রেণি পর্যন্ত দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের বিনা বেতনে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়। পাশাপাশি মেধাবী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তিও প্রদান করা হয়। ২০১২ সালের বিধান অনুযায়ী গঠিত এ ট্রাস্ট প্রধানমন্ত্রী নিজেই উপদেষ্টা পরিষদের সভাপতি।

প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট এর কার্যক্রম

পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে, অর্থাভাবে দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের ঝড়ে পড়া রোধ করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যাগে এই ট্রাস্ট গঠিত হয়। এই ট্রাস্ট ফান্ড থেকে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি, আর্থিক সহায়তা, অনুদান ও উচ্চ শিক্ষায় বৃত্তিমূলক সাহায্য প্রদান করা হয়।

আরো পড়ুন : শিক্ষাবৃত্তির আবেদন ফরম পূরনের সকল নিয়ম

এর ফলে দেশের দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা ডিগ্রী পর্যন্ত কোন প্রকার বেতন ছাড়াই শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট এর আওতায় নিবন্ধিত শিক্ষার্থীরা অতি স্বল্প সময়ে ঝামেলাহীনভাবে উপবৃত্তির অর্থ পেয়ে থাকে। যা বাস্তবায়ন করছে ই-স্টাইপেন্ড সিস্টেম।

ই-স্টাইপেন্ড সিস্টেম প্রয়োগের ফলে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা নিজের সুবিধাজনক সময়ে, স্থানে এবং পছন্দ অনুযায়ী আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে (যেমন বিকাশ, নগদ বা অন্যান্য মাধ্যম) স্ব-স্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্টে উপবৃত্তির অর্থ গ্রহণ করতে পারে।

প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট থেকে সাহায্য পাওয়ার শর্ত

ষষ্ঠ থেকে স্নাতক (পাস) ও সমমান শ্রেণি পর্যন্ত যেকোন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এ সুবিধা নিতে পারবে। তবে তার জন্য শিক্ষার্থীকে অবশ্যই শ্রেণিকক্ষে কমপক্ষে ৭৫% উপস্থিত থাকতে হবে। উপবৃত্তি প্রাপ্তির জন্য নির্বাচিত শিক্ষার্থীর অভিভাবকের বার্ষিক আয় মোট এক লক্ষ টাকার কম হতে হবে।

অপরদিকে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বসবাসকারী অভিভাবকের মোট জমির পরিমাণ পাঁচ শতাংশের কম থাকতে হবে। তবে সিটি কর্পোরেশন এলাকার বাইরে বসবাসকারী অভিভাবকের মোট জমির পরিমাণ পঁচাত্তর শতাংশের কম থাকতে হবে।

প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট থেকে সাহায্য পাওয়ার অন্যান্য শর্তাবলী:

  • প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী, এতিম, অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান, নদীভাঙ্গন কবলিত পরিবারের সন্তান এবং দুস্থ পরিবারের সন্তানগণ উপবৃত্তি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে।
  • প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট এর আওতায় উপবৃত্তিপ্রাপ্ত প্রত্যেক দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থী এর এইচ.এস.সি/সমমান পরীক্ষার মূল মার্কশিট স্নাতক (পাস)/সমমান পর্যায়ের চূড়ান্ত পরীক্ষার সমাপ্তি পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অফিসে জমা রাখতে হবে।
  • সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ভর্তি রেজিস্ট্রার, টটলিষ্ট, শ্রেণি হাজিরা খাতা, বার্ষিক ও নির্বাচনী পরীক্ষার খাতা এবং ফলাফল বিবরণী/রেজিস্ট্রার ভর্তি ও পরীক্ষার তারিখ থেকে ন্যূনতম ২ বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে হবে।
  • উপবৃত্তিপ্রাপ্ত দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে কোনরূপ টিউশন ফি গ্রহণ করা যাবে না। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট থেকে উপবৃত্তিপ্রাপ্ত দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীর টিউশন ফি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্ব-স্ব ব্যাংক হিসাবে প্রেরণ করা হবে।
  • প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের নির্দেশনা অনুযায়ী উপবৃত্তির জন্য “শিক্ষার্থী নির্বাচনী কমিটি” গঠন করতে হবে। উক্ত শিক্ষার্থী নির্বাচনী কমিটি ট্রাস্ট এর নির্ধারিত শর্ত মোতাবেক শিক্ষার্থী নির্বাচন করে নির্বাচিত দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের নাম/শ্রেণি রোল নম্বর উল্লেখপূর্বক একটি রেজুলেশন প্রস্তুত করবেন এবং তা সংরক্ষণ করবেন।

আবেদনের নিয়ম

শিক্ষা সহায়ত পাওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করা যাবে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ওয়েবসাইট থেকে নিবন্ধন করতে হবে। অথবা মোবাইলে গুগল প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করা e-Stipend Management System অ্যাপ দিয়েও আবেদন করা যাবে। এক্ষেত্রে নিবন্ধন করতে কোন সমস্যা হলে হেল্প ডেস্কে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো দিতে হবে।

Related Post

Leave a Comment